মানুষের ক্ষমতা কতটুকু?

মানুষের ক্ষমতা কতটুকু?

মানুষ
এমন একটি জীব যে কিনা নিজের অজান্তেই অজানাকে খুঁজে ফিরে। নতুন কিছুর মধ্যে সৌন্দর্যকে খোঁজে মনের ভেতর আনন্দ পেতে চায়। সেই আনন্দকে আবার অন্যের সাথে ভাগাভাগি করতে চায় । এই কৌতুহলী মানুষগুলোই চাঁদে পৌঁছে গেছে, এমনকি  শনি, মঙ্গল, বৃহস্পতি গ্রহে ও নানা নক্ষত্রেও নভোযান পাঠিয়ে নানা সংবাদ জানতে চাচ্ছে। কত  বিস্ময়কর  মানুষের  কৌতুহল।  আচ্ছা এসব জানার কি দরকার ? মঙ্গলে কি আছে এটা জানলে কি পেট ভরবে ?  না এটা জানলে আমার পকেটে পাঁচশত  টাকা আসবে?  না কখনোই না।  তবুও মানুষ অজানাকে জানার জন্য কিসের এত কৌতুহল কিসের এত ক্ষুধা?

 

 এটাই হচ্ছে জানার ক্ষুধা, জ্ঞানের ক্ষুধা।  মানুষ বিনা স্বার্থেও জ্ঞান অর্জন করতে চায়;  শুধুমাত্র নিজেকে জ্ঞানের খোদা পূরণ করানোর আনন্দে।  বিশ্ব, মহাবিশ্ব, আকাশ, সমুদ্রগর্ভ ইত্যাদি কত বিষয়বস্তু আছে জানার। কিন্তু একজন মানুষ যদি শুধু সমুদ্র নিয়ে জানতে চায়, তবে তার সারা জীবন শেষ হয়ে যাবে তবুও সমুদ্র সম্পর্কে জানা শেষ হবে না । বাকি সব তো পড়েই আছে।

 

ও আচ্ছা আমার পরিচয়টা দিয়ে নেই। আমি মাহমুদুর রহমান আকাশ। নিজের ব্যাপারে বলতে হলে বলতে চাই আমি একজন পুরোদস্তুর ভাবুক। কখন কি মাথায় আসে নিজেই বুঝি না। আমার একটা প্রশ্ন জাগে মনে, আমার এত ভাবনা এইসব এর কি কোন মূল্য নেই? শুধুই কি সময় নষ্ট করা?

এইসব ভাবতে ভাবতেই মনে হল তাহলে এই সমুদ্র কোথা থেকে আসলো?  আকাশ তাঁর বিশালতার বুক খুলে আছে কেন ? ভূগর্ভে কি আছে?  না জানি কত গভীর!  এই সবকিছু কোত্থেকে এলো কিভাবে হল?  আচ্ছা আমি এলাম কিভাবে? মা-বাবার যৌন সম্পর্কে ,বাবার বীর্য থেকে, এই বীর্য কোথা থেকে আসে?  পৃথিবীতে কেউ এই বীর্য তৈরি করতে পেরেছে?  আবার এই পানি থেকে হাড় মাংসে গড়া আমি একজন জল- জ্যান্ত মানুষ।  আবার কি একটা হয় ,কিছু একটা বের হয়ে যায় না কি জানি হয় সেই মানুষ আবার লাশ হয়ে যায়।  দুদিন রেখে দিলে পচে যায় গলে গন্ধ হয়ে যায়।  আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, মা-বাবা, পরিবোরের  যারা আমাকে ভালবাসে তারাও গন্ধ সহ্য করতে পারবেনা।  তাহলে কিসের জন্যে এই দুনিয়া? কিসের ভালবাসা আর কিসের মোহ-মায়া।  কি এমন হয় তাহলে, দিব্যি এই দেহ হাঁটাচলা করছে আর মুহূর্তের মাঝেই নিশ্চল।  একে আমরা বলি লাশ!  কিছুক্ষণ আগেও ছিল মানুষ আর পরক্ষণেই লাশ।

 

 আবার এই সমুদ্র কত গভীর, আকাশ কত বিশাল, আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ে।  কি ভাবছি ভাবতে ভাবতে মাথা ঘুরে যাচ্ছে।   আসলে আমার ক্ষমতা কতটুকু?  যে সব দেখতে পারবো

মানুষের কান আশি থেকে নব্বই ডেসিবেল এর বেশি শুনতে পারে না। মানুষের  শ্রাব্যতার সীমা 20 হার্টজ থেকে 20,000 হার্টজ পর্যন্ত। দেখার ক্ষমতা 400 থেকে 700mm পর্যন্ত।  হাত দিয়ে ধরতে পারে  ঐ  1 ফুট থেকে  2 ফুট এর ভেতরের জিনিসপত্র। ঘ্রাণ নেয়ার  ক্ষমতাও সামান্যই। মুখের ছোট্ট জিহ্ববাতে  কিছু না লাগলে বুঝিনা এর টেস্ট কি। আমাদের ক্ষমতা কি  এই পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের সীমানার মধ্যে আবদ্ধ?  তাহলে আমরা কতটুকুই বা জানতে পারবো এই মহাবিশ্বের।  তার মানে কি দাঁড়াচ্ছে!  মানুষের চোখ, নাক, কান  ইত্যাদির ক্ষমতা খুবই সামান্য।  চাইলেও আমরা এর ক্ষমতা বাড়াতে পারি না বা কমাতে পারি না।  আমরা বাড়াতে পারি না কেন এর ক্ষমতা?  আমাদের জ্ঞানী বিজ্ঞানীরা কত কিছু আবিষ্কার করে ফেলছে কিন্তু নিজের চোখের ক্ষমতা, নিজের হাতের ক্ষমতা, নিজের দেহের ক্ষমতা, নিজের পায়ের ক্ষমতা, গ্রহণের ক্ষমতা এগুলো কেন বাড়াতে পারে না?   আমি কিছুই বুঝিনা।

 

 আমার চোখ গুলো যদি এমন হতো যে সামনে পেছনে এক কিলোমিটার এর সব আমি দেখতে পেতাম।  যে বিজ্ঞানী এই কাজটা করে দিতে পারত তাকে যে কি বলে ধন্যবাদ জানাতাম, না না না না আমি তার গোলাম হয়ে থাকতাম। কি ভাবছি আমি, কই এক কিলোমিটার অবদি দেখবে চোখে একটা কাপড় ভেদ করে দুচোখ কিছু দেখতে পারে না

 

 যদি বাদুরের মতো ১৫০০০০ হার্টজ  কম্পাঙ্ক পর্যন্ত শুনতে পেতাম। এটাও কোন মানুষই পারে না, পারে বাদুড়।  অথচ মানুষ শুধুমাত্র 20 হাজারের মধ্যের শব্দ শুনতে পায়।  তাহলে কি সামান্য একটা বাদুরের শোনবার  ক্ষমতার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ হেরে যাচ্ছে।  ভাই এটা মেনে নেয়া যায় না। বাদুড এতো কেন শুনবে?  আমরা মানুষরা  জ্ঞান-বিজ্ঞানে এত পন্ডিত তাও পারছি না কেন?

 

 আচ্ছা আমরা চোখে দেখি, কানে শুনি, ব্রেইনে  চিন্তা করি, হাতে ধরি, পায়ে চলি, নাকে ঘ্রান নেই, এর মাঝেই কি আমরা মানুষ? এইটুকুর ভেতরেই কি আমাদের ক্ষমতা?

 একটা  উট প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি পেটে জমিয়ে রাখতে পারে দীর্ঘ দিন। একটা মশার 47 টা দাঁত থাকে অথচ মানুষ এত বড় প্রাণী হয়েও মাত্র 32 টা দাঁত। তাহলে মশার 47 তা মানুষের বত্রিশটা কেন 50 টা দাঁত হলো না কেন মানুষের?  ধ্যাত এটা কিছু হলো!

 তাহলে মানুষের আসলে ক্ষমতা কতটুকু? মানুষের ক্ষমতা কি তাহলে অসীম নাকি সসীম।  হয়তো সীমার মাঝেই  অসীম।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ