কিভাবে বিভিন্ন ধরনের রং প্রস্তুত ও নানাভাবে ব্যবহার করা হয়

 আজ থেকে ১০০ বছর আগেও যেমন ছিল পৃথিবী আর আজকের পৃথিবী যেন তার থেকে অনেক বেশি উজ্জ্বল এবং বর্ণাঢ্য হয়ে উঠেছে। চারিদিকে নানা রঙের ছড়াছড়ি। যা মানুষের রুচিবোধকে যেমন বদলে দিয়েছে তেমনি জীবনমানকেও করেছে বহুরুপে রঙিন। নানা রঙের উদ্ভবের মাধ্যমে সভ্যতা আজ নতুন রুপে  সেজেছে। প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক কিভাবে বিভিন্ন ধরনের রং প্রস্তুত করা হয়? যেসব রং  সাজিয়েছে নব রুপে এই পৃথিবীকে।

কিভাবে বিভিন্ন ধরনের রং প্রস্তুত ও নানাভাবে ব্যবহার করা হয়


বিভিন্ন ধরনের রং প্রস্তুতের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি বিদ্যার অগ্রগতির ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। রঙের বিকাশের ফলে আমরা বিভিন্ন প্রকার রঙের কাপড় দেখতে পাই। এই বিভিন্ন প্রকারের রং গুলি  বিগত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্তও কেবলমাত্র প্রকৃতিজাত ফুল, উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যেত। এই প্রাকৃতিক রঙের বৈচিত্র্য ছিল সীমাবদ্ধ। সেসময় নীলের গাছ চাষ করে নিল রং পাওয়া যেত। এছাড়া মেলার নামে লাল রং, শাপলা ওয়ার নামক হলুদ রং এবং টারমারিক নামের আরেক প্রকার হলুদ রং পাওয়া যেত। বিশেষ ধরনের সামুদ্রিক শঙ্খ থেকে ১৮৫৬ সালে একটি কৃত্রিম রং উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে রংয়ের জগতে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। এই কৃত্রিম রংটি ছিল লাল কালারের।

কুইনাইন ঔষধটি তৈরীর সময় আকস্মিকভাবে এই রংটি আবিষ্কার হয়। এই আবিষ্কারের পর আলকাতরা থেকে কৃত্রিম রং প্রস্তুতের চেষ্টা চলতে থাকে। এই প্রচেষ্টার ফলেই পরবর্তী সময়ে কয়েক হাজার কৃত্রিম রং আবিষ্কার হয়ে যায়।

এই কৃত্রিম রং অবশ্য পশমের কাপড়ে স্থায়ী ও উজ্জ্বলভাবে রং করার উপযোগী হলেও সুতি কাপড়ের ওপর তার স্থায়িত্ব বেশি ছিল না। পানিতে ধুলে সুতি কাপড়ের রং উঠে যেত।

এই অসুবিধা দূর করার জন্য সুতি কাপড় কেনার আগে ধাতব লবণের অথবা এই লবণের দ্রবণ কে ট্যানিক এসিডের ডুবিয়ে নেওয়া হত এর ফলে রং স্থায়ী হয়ে যেত। এই রং উদ্ভাবনের পর এর ব্যাপক প্রচলন হয়। এই রংয়ের মোট ৬টি ভাগ থাকে। সুতি কাপড়ে তা ব্যবহার করার সময় সুতিবস্ত্র টি প্রথমে একটি ভাগের রাঙিয়ে নেবার পর আবার অন্য ভাগের দ্রবণে ডুবিয়ে নেওয়া হত।

আরো পড়ুনঃ


দুটি ভাগ এর রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে কাপড়ের রঙের সৃষ্টি হত আর এর পর যে রং হয় তা স্থায়ী হয় এবং ধোয়ার সময় আর রং উঠে যায় না।

এইভাবে আঁশযুক্ত বস্ত্রে বা সুতির কাপড়ের স্থায়ী রং করার আরেকটি প্রচলিত প্রক্রিয়া হল ভ্যাট পদ্ধতি। নীল ডেনিম জাতীয় কাপড় রং করার জন্য কৃত্রিম নীলের সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে নেওয়া হয়। এরপর কাপড় রং করা হয়ে গেলে তা পাকা করার উদ্দেশ্যে কাপড়টিকে আবার রাসায়নিক দ্রবণে ডুবিয়ে নেওয়া হয়। আজকের দিনে আলকাতরা ও পেট্রোলিয়াম থেকে প্রস্তুত অনেক ধরনের রঙ আমরা দেখতে পাই যেগুলি শুধুমাত্র কাপড় রং করার জন্যই ব্যবহার করা হয়।

 পড়ুনঃ

 

আর এই রং শুধুমাত্র কাপড়ে নয় প্লাস্টিক, কাগজ, চামড়া, সার তৈরি রাবার, সাবান ইত্যিাদি নানা ধরনের জিনিসে এমনকি খাবার, প্রসাধনী দ্রব্য, কালি এবং ধাতব জিনিসপত্র রং করার কাজেও ব্যবহার করা হয়।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ